ওয়েব ডেস্ক; কলকাতা ১৮ সেপ্টেম্বর : ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় হলো কানাডার তৃতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় এবং এটি রাষ্ট্রসংঘের স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য বিশ্বের শীর্ষ ৪০-এ স্থান লাভ করেছে। বিশ্বজুড়ে অংশীদারদের সহযোগিতায় এই বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে চলেছে। এটি ডলর ৩১৮ মিলিয়ন কানেক্টেড মাইন্ডস ইনিশিয়েটিভ-এর মতো উচ্চমানের কর্মসূচি ও বিশ্বমানের আন্তঃবিষয়মূলক গবেষণার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদান করছে, যা শিল্প-উদ্যোগগুলিকে বাজারে শীঘ্রই যথার্থ প্রযুক্তি ব্যবস্থা নিয়ে আসতে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পরবর্তী প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ দিতে সক্রিয় করে তুলবে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে বিনিয়োগ করতে পেরে ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় গর্বিত। এই সমস্ত উদ্যোগ ভারতের সাথে আমাদের জোঁটবন্ধনকে শক্তিশালী করবে এবং ও. পি. জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একটি ইন্ডিয়া ইমারশন প্রোগ্রাম সহ আমাদের প্রতিভাসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকদের জন্য পারস্পরিক লাভের সুযোগ সৃষ্টি করবে, কারণ ভারতকে বুঝতে, এর বিকাশের ঘটনাবলি এবং বিশ্বে ভারতের প্রভাব সম্পর্কে জানতে কানাডিয়ান ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া আরও একটি প্যান-ইন্ডিয়া এন্ট্রেপ্রিনিউরশিপ বুট ক্যাম্প থাকবে, যা বিশ্বের বৃহত্তম ব্যবসা ও উপভোক্তা বাজারের সামনে প্রতিভাবান ছাত্র-ছাত্রীদের তুলে ধরবে, এবং একটি নতুন গ্লোবাল রিসার্চ সিড ফান্ড চালু করা হবে, যা ভারতের মতো অগ্রাধিকারভিত্তিক দেশগুলির শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিল্পদ্যোগ, সরকারি সংস্থা ও এনজিও গুলির সাথে বৈশ্বিক গবেষণার সহযোগিতায় বিনিয়োগ করবে। একাধিক ভারতীয় মর্যাদাপূর্ণ শিল্পোদ্যোগ ও প্রতিষ্ঠানের মতো ইয়র্কও সেই সমস্ত ক্ষেত্রে সমতা ও অন্তর্ভুক্তিকরণের মোকাবিলায় শিক্ষাদান, গবেষণা ও জ্ঞান সংগঠিতকরণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ইয়র্ক হলো প্রথম কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়, যাদের দুর্যোগের বিপদ, জরুরীকালীন ব্যবস্থাপনা ও মানবিক কার্যাবলি, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমতা, বৈচিত্র্যতা ও অন্তর্ভুক্তিকরণের মতো ক্ষেত্রগুলিতে নীতির উন্নয়নে আন্তঃবিভাগীয় সহযোগিতা প্রচারের জন্য উৎসর্গকৃত রাষ্ট্রসংঘের একটি সিআইএফএএল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়াও জলের স্থায়ীত্বের সংকট সামলানোর লক্ষ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ইউএনআইটিএআর -এর সাথে অংশীদারিত্বে রূপান্তরকারী একটি নতুন গ্লোবাল ওয়াটার অ্যাকাডেমির প্রধান অ্যাকাডেমিক অংশীদার।
শিক্ষাগত সহযোগিতা ও দুই দেশের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে সাহায্যের জন্য ও.পি. জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয় ও কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমঝোতা চুক্তি (মউ) স্বাক্ষর করেছে।
অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রী ও ফ্যাকাল্টি বিনিয়ম কর্মসূচি, বিদেশে স্বল্প-মেয়াদী অধ্যয়ন কর্মসূচি, ডুয়াল-ডিগ্রি কর্মসূচি, ও সহযোগিতামূলক গবেষণার প্রকল্পের উপর গুরুত্ব আরোপের পরিকল্পনা করেছে।
ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম প্রেসিডেন্ট ও উপাধ্যক্ষ প্রোফেসর (ড.) রোন্ডা এল. লিনেটন এবং ও. পি. জিন্দাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাপক উপাধ্যক্ষ প্রোফেসর (ড.) সি. রাজ কুমার মউ-এর অংশ হিসেবে একাধিক যৌথ উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে দেশ হিসেবে ভারতকে এবং এর বিকাশের ঘটনাবলিকে ভালোভাবে বোঝার জন্য কানাডিয়ান ছাত্র-ছাত্রীদের সক্রিয় করে তুলতে ইন্ডিয়া ইমারশন প্রোগ্রাম চালু করা।
আজকের বিশ্বে প্রগতিশীল বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বের উপর আলোকপাত করে প্রোফেসর (ড.) রোন্ডা এল. লিনেটন বলেন, “বিশ্ব মহামারীর কবল থেকে পৃথিবী যখন পুনরুদ্ধার হচ্ছে, তখন ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ও.পি. জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রগতিশীল বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে ক্রমবর্ধিত ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, মুদ্রাস্ফিতির কবলে পড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার ফলে আমাদের গ্রহ ধ্বংস হওয়ার হুমকি – এআই ও অটোমেশনের মতো উন্নত প্রযুক্তির দ্রুত বিস্তার নেভিগেট করার সময় অবিশ্বাস্য জটিল প্রত্যাহ্বানগুলির মোকাবিলা করতে বিশ্বব্যাপী ব্যস্ততা সহজ করার ক্ষেত্রে এক বৃহৎ ভূমিকা পালন করার সুযোগ দেখা দিয়েছে। এই নতুন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে ভারত ও কানাডা স্বাভাবিক অংশীদার।”
প্রোফেসর (ড.) সি. রাজ কুমার বলেন, “জ্ঞান বিনিময় ও সুযোগের বিশ্বব্যাপী ক্ষেত্র তৈরি করাতে ভারতের অনুসন্ধানে কানাডা হলো এক গুরুত্বপূর্ণ অংশিদার। কানাডার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এই সহযোগিতা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলস্টোন। আন্তর্জাতিক শিক্ষার জন্য কানাডার ব্যুরোর এক সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে যে কানাডার আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ৩৪ শতাংশই ভারত থেকে আসে। আসন্ন ভবিষ্যতে ভারত ভ্রমণে আসা কানাডার ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উৎসাহের প্রয়োজন রয়েছে। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে, এই সম্পর্ক শুধুমাত্র আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতাকে বৃদ্ধি করবে না বরং তার পাশাপাশি ভারত ও কানাডার মধ্যে দীর্ঘ-মেয়াদি শিক্ষাগত সম্পর্ককেও শক্তিশালী করবে।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার ক্ষেত্রে, ভারত ও কানাডার মধ্যে রয়েছে একটি ঘনিষ্ঠ ও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক। কানাডা-ভারত দ্বিপাক্ষিত সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণামূলক অংশীদারিত্ব। ছাত্র-ছাত্রী যাতায়াত, গবেষণা অংশীদারিত্ব এবং শিক্ষাগত বিনিময়ের মতো ক্রমবর্ধমান উৎপাদনশীল সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলির মতো একাধিক কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার অংশীদার দুটি দেশের জন্য স্বাভাবিক। ২০০৯ সালে আমাদের প্রতিষ্ঠার পর থেকে, ভারতের প্রথম ‘গ্লোবাল ইউনির্ভাসিটি’ নির্মাণ করার উপর আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছিল। উচ্চশিক্ষার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকতাবোধ সৃষ্টি করে এই লক্ষ্যের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করেছি, একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় গ্লোবাল শিক্ষার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা।”