ওয়েব ডেস্ক; ৮ জুলাই: ভারতের জাতীয় ডোপিং বিরোধী সংস্থা (এনএডিএ ভারত) নতুন দিল্লিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কার ডোপিং বিরোধী সংস্থার (এসএআরএডিও)-এর সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছে। নতুন দিল্লিতে এনএডিএ ভারত এবং এসএআরএডিও সহযোগিতা বৈঠকের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ভারত সরকারের তথ্য সম্প্রচার এবং যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর। এছাড়াও ভারত সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রকের সচিব সুজাতা চর্তুবেদী, এসএআরএডিও-র সদস্য দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ক্রীড়া ক্ষেত্রে ডোপিং বিরোধী আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই মউ সাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে অনুরাগ সিং ঠাকুর আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভারতের ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণ ও সাফল্যের বিষয়ে আলোকপাত করেন এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রকে স্বচ্ছ রাখার বিষয়ে ভারতের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার কথাও ব্যক্ত করেন।
অনুরাগ ঠাকুর বলেন, “ নরেন্দ্র মোদী আগামী বছরগুলিতে ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভারতকে বিশেষ শক্তিশালী করে তোলার স্বপ্ন দেখেছেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রক এই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের মানোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতীয় খেলোয়াড়দের আরও ভালো ফলাফলের জন্য যথা সম্ভব চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য হল উন্নতমানের প্রশিক্ষণ, যথাযথ ক্রীড়া উপযোগী পরিকাঠামো প্রদান, সব খেলার জন্যই প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণ শিবিরের মাধ্যমে সুযোগ বাড়ানো। এছাড়াও ক্রীড়া জগতে লিঙ্গ-সাম্য বজায় রাখার বিষয়ের বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।”
অনুরাগ ঠাকুর আরও বলেন, ভারত বিশ্বের উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সেতু বন্ধনের কাজ করছে। এশীয় অঞ্চলে আমাদের বন্ধুদের জন্য সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নেও অংশ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্ব ডোপিং বিরোধী সংস্থা এবং ইউনেস্কোর ক্রীড়া ক্ষেত্রে ডোপিং বিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশেনে ভারতের ভূমিকা ক্রমশ বাড়ছে। এ থেকে প্রমানিত হয় যে ভারত বিশ্বে ডোপিং বিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে চাইছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ভারত বর্তমানে জি-২০ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। এই সময় এশিয়া অঞ্চলের উপযোগী বিভিন্ন বিষয় বিশ্বের সামনে তুলে ধরা ভারতের মূল লক্ষ্য। আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব এই অঞ্চলে ক্ষমতায়নের পাশাপাশি ক্রীড়া ক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। শ্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, ভারতের এনএডিএ এবং এসএআরএডিও-র মধ্যে এই ধরনের মাদক বিরোধী কোনো মউ সাক্ষরিত হল। তিনি সদস্য দেশগুলিকে একযোগে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ক্রীড়া ক্ষেত্রে মাদক বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এনএডিএ ভারতের মহানির্দেশক ও সিইও রীতু সাঁই এবং এসএআরএডিও-র মহানির্দেশক শ্রী মহম্মদ মাহিদ শরীফ তাঁদের নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে মউ স্বাক্ষর করেন। আগামী ৩ বছরের জন্য সহযোগিতা বাড়াতে ও কার্যকর পদক্ষেপের জন্য এই মউটি সাক্ষরিত হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ডোপিং বিরোধী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা, নমুনা সংগ্রহ প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ডোপিং বিরোধী কাজে উৎসাহ দেওয়া এই সংক্রান্ত বিভিন্ন পাঠক্রম, কর্মশালা, আলোচনা সভা, গবেষণা ইত্যাদির আয়োজন এবং প্রশিক্ষক, শিক্ষক ও ম্যানেজারদের এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।
ভারত সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রকের সচিব সুজাতা চতুর্বেদী এশিয়া/ওশেনিয়া অফিসের নির্দেশক কাজুহিরো হায়াশি, এনএডিএ ভারতের মহানির্দেশক ও সিইও রীতু সাঁই এবং এসএআরএডিও-এর মহানির্দেশক শ্রী মহম্মদ মাহিদ শরীফ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।
উদ্বোধনী পর্বের পর এনএডিএ ভারত এবং এসএআরএডিও-এর সদস্যদের মধ্যে প্রথম প্রকল্প রূপায়ণ বিষয়ে আলোচনা হয়। সদস্য দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা তাদের নিজ নিজ দেশে ডোপিং বিরোধী কাজকর্মের বিষয়ে আলোকপাত করেন।