ভালোবাসার দিবসকে অন্য স্বাদে উদযাপন করল অ্যাপোলো হসপিটালস্

ওয়েব ডেস্ক; ১৬ ফেব্রুয়ারি: মাত্র দুদিন আগেই চলে গেল ভালোবাসার দিবস, অর্থাৎ ভ্যালেন্টাইন্স ডে। যারা মনের মনিকোঠায় থাকেন তাদেরকে স্পেশাল উপহার দেওয়ার এক অন্যতম দিন এই ভ্যালেন্টাইন্স ডে। কিন্তু শুধুমাত্র এই ভ্যালেন্টাইনস ডেতেই কি প্রিয়জনদের বিশেষ উপহার দেওয়া যায়। অনেকের কথায় না! প্রিয়জনদের বিশেষ উপহার দেওয়ার জন্য শুধু একটি মাত্র দিন কেই কেন আমরা বেছে নেব। সারা জীবন ধরে যেকোনো সময় প্রিয়জনদের দেওয়া যায় এই উপহার। শুধু উপহার নয়, সঙ্গে মাখানো থাকে স্নেহের পরশ।
ভালোবাসা দিতে এবং ভালোবাসার মানুষকে তার প্রয়োজনীয় জিনিস দিতে কোন নির্দিষ্ট সময় লাগে না। এই ভাবনাকে সবার মাঝে তুলে ধরতে উদ্যোগী হল কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস। কিডনি এবং লিভার – শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যখন বিকল হয়ে পড়ে তখন তার প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যম্ভাবেই হয়ে যায়। রোগীর তখন দরকার হয় একজন সঠিক মানুষের যিনি সেই অঙ্গ ডোনেট করে তার জীবন বাঁচাবেন। তার ওপর এই অঙ্গ ডোনার যদি হন একেবারে নিজের কাছের মানুষ তাহলে যিনি অঙ্গ দিচ্ছেন এবং যিনি রোগী তাদের মধ্যে সম্পর্কের বাঁধন হয় আরো শক্ত।
বৃহস্পতিবার ১৬ই ফেব্রুয়ারি, কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস ভালোবাসার এক অন্যরকম দিন উদযাপন করলো, তাদের হসপিটালে হয়ে যাওয়া কিডনি এবং লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য আসা মানুষকে নিয়ে। যারা নিজেদের কাছের মানুষের কাছ থেকে এই অঙ্গটি পেয়েছেন এবং সুস্থ আছেন।
যাদের দরকার ছিল লিভার অথবা কিডনির এবং যারা দিলেন তারা সম্পর্কে কেউ ভাই-বোন কেউ আবার স্বামী স্ত্রী।
হেমন্ত ঠাকুর যার কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা হয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে তার অর্ধাঙ্গিনী কাঞ্চনমালা নিজের একটি কিডনি স্বামীকে দিলেন। ঠিক একই রকম ভাবে পান্নালাল দাস কে কিডনী দিয়ে সুস্থ করেন স্ত্রী রিংকু দাস। পিউ গুহ নিজের একটি কিডনি তার স্বামী সম্বিত গুহকে দিয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন আরো অনেকে। এই পদ্ধতি যে শুধুমাত্র স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আটকে রয়েছে তা নয় সৌভিক আচার্য যিনি লিভারের বহু সমস্যায় ভুগছিলেন এবং প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল লিভার প্রতিস্থাপনের তখনই এগিয়ে আসেন তার বোন নুপুর মুখার্জি।
অর্থাৎ এই স্বামী স্ত্রী এবং ভাই বোনের যে মধুর সম্পর্ক সেই সম্পর্ককে কোনভাবেই ভাষা দিয়ে বোঝানো যায় না। অ্যাপেলো মাল্টি স্পেশালিটি হসপিটালস এদিন তাদের সম্বর্ধনা জানায়।
তাই ভ্যালেন্টাইন ডেকে উদযাপন করার এর থেকে ভালো অনুষ্ঠান কিন্তু হয়তো আর হয় না।

এ বিষয়ে বলতে গিয়ে কলকাতার অ্যাপেলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল এর ডিএমএস ডাক্তার সুরিন্দর সিং ভাটিয়া বলেন, ভ্যালেন্টাইন ডে একদিনের কথা নয় তা সব সময়ের জন্য। এটি একটি ভাবনা। অঙ্গ ডোনেট করার জন্য অনেককেই পাওয়া যায় কিন্তু সেই অঙ্গ যদি হয় একদম কাছের কারোর তাহলে সেই মুহূর্ত হয়ে আনন্দদায়ক। প্রকাশ পায় তাদের মনের স্নেহ প্রকাশ পায় তাদের ভাবনা।”

তিনি আরো যোগ করেন , ” খুব কাছের কারুর যদি অঙ্গ প্রতিস্থাপনের দরকার হয় তাহলে যদি নিজেরাই সেই অঙ্গ দিতে পারি তাহলে এর থেকে ভালো উপহার আর কিছু হয় না। অনেকেই ভয় পান এই কাজে কিন্তু ভয় না পেয়ে নিজেদের কাছের কাউকে নতুন জীবন দেওয়ার একটা আনন্দ উপভোগ করা উচিত। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ফলে দুজনেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে পারবেন।”

এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডা. রামদীপ রায়, ডা. সুমিত গুলাটি, ডা. সুপ্রিয় ঘটক, ডা. সন্দীপ ভট্টাচার্য, ডা. বিনয় মাহিন্দ্রা প্রমুখ।

অ্যাপেলো হসপিটালের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান সকলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.