রাসায়নিক সারের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ও পরিবর্ত সার ব্যবহারে উৎসাহ দিতে পিএম প্রণাম প্রকল্প

ওয়েব ডেস্ক; ৫ ফেব্রুয়ারি: ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে নেট জিরো কার্বন নিঃসরণ এবং সবুজ অর্থনীতির দিকে ক্রমশ ধাবিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারম। সংসদে সম্প্রতি ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করে মন্ত্রী ‘এলআইএফই’ বা পরিবেশের জন্য জীবনযাত্রা এই লক্ষ্যের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, পরিবেশ বান্ধব জীবনযাত্রার জন্য ক্রমশ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অমৃতকালে ‘সবুজ উন্নয়ন’ এর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েই বাজেট তৈরি করা হয়েছে।

সবুজ হাইড্রোজেন মিশন

সম্প্রতি ঘোষিত জাতীয় সবুজ হাইড্রোজেন মিশন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এর ফলে লো কার্বন অর্থনীতির প্রতি আগ্রহ বাড়বে এবং জীবাশ্ম জ্বালানী আমদানির নির্ভরতা কমবে। এই ক্ষেত্রে প্রযুক্তির উন্নয়ন হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

শ্রীমতী সীতারমন ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত বার্ষিক উৎপাদন ৫ এমএমটি করার লক্ষ্য নিয়েছে বলেও ঘোষণা করেন।

শক্তি, প্রবাহ এবং সংরক্ষণ প্রকল্প

অর্থমন্ত্রী পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের মাধ্যমে নেট জিরো এবং শক্তি নিরাপত্তা ক্ষেত্রে মূলধনী বিনিয়োগের জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাটারি শক্তির সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনাকে সহায়তা দেওয়া হবে। এর ক্ষমতা হবে ৪ হাজার এমডাব্লুএইচ।

পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ব্যবস্থাপনা

লাদাখ থেকে ১৩ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির গ্রীড ব্যবস্থাপনা সরিয়ে আনার জন্য আন্তঃরাজ্য পরিবহণ ব্যবস্থাপনায় ২০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে ৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় বিনিয়োগ থাকবে।

সবুজ ঋণ কর্মসূচি

অর্থমন্ত্রী পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের আওতায় একটি সবুজ ঋণ কর্মসূচির প্রস্তাব দেন। বিভিন্ন কোম্পানী, স্থানীয় সংগঠন ও ব্যক্তিগত স্তরে আচরণগত পরিবর্তনে উৎসাহ দিতে ও পরিবেশের রক্ষায় উৎসাহ দেবে এই কর্মসূচি।

পিএম প্রণাম

রাসায়নিক সারের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং পরিবর্ত সার ব্যবহারে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে উৎসাহ দিতে পিএম প্রণাম কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে।

গোবর্ধন প্রকল্প

সার্কুলার অর্থনীতিতে উৎসাহ দিতে গোবর্ধন প্রকল্পের আওতায় বর্জ্য থেকে সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ৫০০টি নতুন কারখানা গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে থাকবে ২০০টি কমপ্রেসড বায়ো গ্যাস কারখানা। এর ৭৫টি হবে শহর এলাকায়। এছাড়া ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে ৩০০ কমিউনিটি বা ক্লাস্টার ভিত্তিক কারখানা গড়ে তোলা হবে।

ভারতীয় প্রাকৃতিক ক্ষেতি বায়ো ইনপুট সম্পদ কেন্দ্র

আগামী তিন বছরের বেশি সময় ১ কোটি কৃষককে প্রাকৃতিক কৃষি ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুবিধা প্রদান করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১০ হাজার বায়ো ইনপুট রিসোর্স কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

এমআইএসএইচটিআই (মিষ্টি)

বনায়নের জন্য ভারতের প্রচেষ্টাকে সফল করতে অর্থমন্ত্রী এক বিশেষ প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন। এর মাধ্যমে উপকূল এলাকায় ও লবনাক্ত জমিতে ম্যানগ্রোভ রোপণ করা হবে। এমজিএনআরইজিএস তহবিল সহ অন্যান্য সূত্র থেকে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে।

অমৃত ধারোহার

জলা জমির বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণের ভূমিকার ওপর বিশেষ জোর দেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এই লক্ষ্যে অমৃত ধরোহর প্রকল্পের ঘোষণা করে তিনি বলেন, এটি সংরক্ষণের মূল্যবোধকে জাগ্রত করতে সহায়ক হবে। আগামী তিন বছরে জমা জমির ব্যাপক ব্যবহার বাড়াতে, জীব বৈচিত্র্য বাড়াতে এবং ইকো পর্যটনের সুযোগ ও স্থানীয় মানুষের আয়ের উৎস বাড়ানোর লক্ষ্যে এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.